অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরার প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই করোনা উপসর্গের রোগী রয়েছে। এর অধিকাংশই সাধারণ জ্বর, সর্দি, কাশি মনে করে বাড়িতেই বসে টোটকা চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকেই করোনা উপসর্গ বুঝেও বাড়ি লকডাউনের ভয়ে পরীক্ষা করাতে যাচ্ছেন না। অনেকেই করোনা পরীক্ষার রিপোর্টের ওপর ভরসা করতে পারছেন না। বিধায় হাসপাতালে নমুনা দিতেও তাদের অনীহা।
রবিবার পর্যন্ত সাতক্ষীরায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১২ জন। আর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে ৩৩ জন।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আনিসুর রহিম বলেন, করোনা রিপোর্টের ওপর মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। করোনা রিপোর্টের সাথে রোগীর লক্ষণ মিলছে না। যে কারণে অনেকেই আর পরীক্ষা না করে বাড়িতে বসেই টোটকা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনের কোনো তৎপরতাও আর দেখা যাচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে সাতক্ষীরায় করোনা পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। এখনি পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে দেশের যেকোনো জেলার চেয়ে সাতক্ষীরায় করোনায় মৃত্যু সংখ্যা কয়েক গুন বৃদ্ধি পাবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’
এদিকে, সাতক্ষীরার একাধিক বাড়িতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে বেশির ভাগ মানুষের বাড়িতে জ্বর, সর্দি, কাশির রোগী রয়েছে। এদের অধিকাংশের করোনা উপসর্গ। গায়ে প্রচণ্ড ব্যথা, জ্বর ১০২ এর নিচে নামছে না, খাওয়ার কোনো রুচি নেই, প্রচণ্ড দুর্বল, ওষুধ খেয়েও জ্বর নামানো যাচ্ছে না, থেমে থেমে পাতলা পায়খানা হচ্ছে, বমি বমি ভাব। এক কথায় করোনার যাবতীয় লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, করোনা রিপোর্টের ওপর আস্থা কমে যাওয়া, বাড়ি লকডাউনসহ বিভিন্ন কারণে তারা বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
করোনা হয়েছে ভেবে অনেকেই ঘরোয়া টোটকা চিকিৎসা গ্রহন করছেন বলে জানান তারা।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. সাফায়াত বলেন, বর্তমান মৌসুমে জ্বর, সর্দি, কাশি একটু বেশি হয়ে থাকে। যেহেতু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে বিধায় উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করাতে হবে। ঘরে বসে থাকলে চলবে না।
রোগ লুকিয়ে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার কথা বলেন তিনি।